dbdmail.com
ঢাকা , সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
বরিশাল বিভাগ সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বেকসুর খালাস তারেক রহমান অভিনেত্রী রুনা খানের বাবা ইন্তেকাল করেছেন কানাডা কাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিল? নতুন বাংলাদেশে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার: প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক নারী দিবসে অদম্য নারীদের সম্মাননা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন চাপের মুখে ভারতকে কাছে টানতে চাইছে চীন বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে লুট করা স্বর্ণ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬ ইসরায়েলকে ৪ দিনের আলটিমেটাম সৌদি আরবে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন ঢাবি ছাত্রীকে হেনস্তকারী গ্রেপ্তারকৃত কর্মচারীর মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় একদল ব্যক্তি ট্রুডোকে ‘গভর্নর’ বলে ট্রাম্পের ঠাট্টা

পশ্চিম তীরে ইসারায়েলি তাণ্ডবে বাস্তুচ্যুত ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের হামলা থামেনি। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ অভিযানের কারণে পশ্চিম তীর থেকে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এসব ফিলিস্তিনি শুধু স্থানীয় বাসিন্দাই নয়, বরং শরণার্থী শিবিরের অধিবাসীরাও এতে উচ্ছেদ হচ্ছেন।

২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় পশ্চিম তীরের জেনিন, তুলকারম, নূর-শামস ও তুবাস অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২৫ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে দুই বছর বয়সী একটি শিশু রয়েছে, যার মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েলি এক স্নাইপারের গুলিতে। অন্যদিকে, নূর-শামস শরণার্থী শিবিরে অভিযান চলাকালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী নিহত হয়েছেন এবং তার গর্ভের সন্তানও মারা যায়।

ইসরায়েলি সেনারা এসব এলাকায় বাড়িঘর ধ্বংস করে এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধাদের আস্তানা থাকার দাবি করে এসব ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করছে। তবে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা দাবি করছেন, তারা বছরের পর বছর এসব এলাকায় বসবাস করে আসছেন, এবং এখন তাদের পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে।

বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এসব ফিলিস্তিনিরা মৌলিক প্রয়োজনীয়তার অভাবে ভুগছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসাসেবা সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। তিনি রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ, এর মেয়াদ কখন শেষ হবে, তা তেল আবিব নির্ধারণ করবে।”

এছাড়া, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা বিলম্বিত হয়েছে। নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সফরের পর ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ফিলিস্তিনিদের পশ্চিম তীর থেকে উচ্ছেদ করে মিসর ও জর্ডানে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি সুসংগত কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্বারা মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান দেওয়া হয়েছিল।”

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর, নেতানিয়াহু প্রকাশ্যেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এবং ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে যেসব অস্ত্র আটকে ছিল, তা পুনরায় সরবরাহ শুরু হয়েছে এবং জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে তহবিল দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেও পশ্চিম তীরে গণউচ্ছেদ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে আরও গভীর সংকটে ঠেলে দেবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পশ্চিম তীরে ইসারায়েলি তাণ্ডবে বাস্তুচ্যুত ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি

আপডেট সময় ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের হামলা থামেনি। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ‘অপারেশন আয়রন ওয়াল’ অভিযানের কারণে পশ্চিম তীর থেকে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এসব ফিলিস্তিনি শুধু স্থানীয় বাসিন্দাই নয়, বরং শরণার্থী শিবিরের অধিবাসীরাও এতে উচ্ছেদ হচ্ছেন।

২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় পশ্চিম তীরের জেনিন, তুলকারম, নূর-শামস ও তুবাস অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২৫ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে দুই বছর বয়সী একটি শিশু রয়েছে, যার মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েলি এক স্নাইপারের গুলিতে। অন্যদিকে, নূর-শামস শরণার্থী শিবিরে অভিযান চলাকালে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী নিহত হয়েছেন এবং তার গর্ভের সন্তানও মারা যায়।

ইসরায়েলি সেনারা এসব এলাকায় বাড়িঘর ধ্বংস করে এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধাদের আস্তানা থাকার দাবি করে এসব ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করছে। তবে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা দাবি করছেন, তারা বছরের পর বছর এসব এলাকায় বসবাস করে আসছেন, এবং এখন তাদের পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে।

বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া এসব ফিলিস্তিনিরা মৌলিক প্রয়োজনীয়তার অভাবে ভুগছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসাসেবা সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। তিনি রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ, এর মেয়াদ কখন শেষ হবে, তা তেল আবিব নির্ধারণ করবে।”

এছাড়া, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা বিলম্বিত হয়েছে। নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এই সফরের পর ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ফিলিস্তিনিদের পশ্চিম তীর থেকে উচ্ছেদ করে মিসর ও জর্ডানে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি সুসংগত কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্বারা মধ্যপ্রাচ্য সমস্যার দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান দেওয়া হয়েছিল।”

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর, নেতানিয়াহু প্রকাশ্যেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এবং ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, বাইডেন প্রশাসনের অধীনে যেসব অস্ত্র আটকে ছিল, তা পুনরায় সরবরাহ শুরু হয়েছে এবং জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে তহবিল দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেও পশ্চিম তীরে গণউচ্ছেদ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতকে আরও গভীর সংকটে ঠেলে দেবে।