মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত বর্তমানে মিত্র দেশগুলোর জন্য অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত গাজা উপত্যকাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে মিত্র দেশগুলো কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে তাদের জন্য।
গাজা ইস্যু:
ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করে গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছেন যা পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিনের নীতির বিপরীত। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান থেকে সরে এসে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এতে ফিলিস্তিনিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এবং ইউরোপের দেশগুলোর নেতারা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
মিত্রদের প্রতিক্রিয়া:
গাজা দখলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইউরোপ, জাতিসংঘ ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য মিত্র দেশগুলো সরব হয়েছে। তাদের উদ্বেগ, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শান্তি প্রক্রিয়াকে বিপদে ফেলতে পারে এবং গাজার যুদ্ধবিরতির ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে। জাতিসংঘ ট্রাম্পকে জাতিগত নিধনের সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো যেমন ফ্রান্স, স্পেন এবং জার্মানি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন করবে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া:
যুক্তরাজ্য ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলেও, তারা তার কিছু পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছে। ইউরোপীয় নেতারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, তারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের পরিকল্পনা সমর্থন করেন না।
ভূরাজনৈতিক সংকট:
এই সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের আন্তর্জাতিক সংকট সৃষ্টি করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো উদ্বিগ্ন যে, যুক্তরাষ্ট্রের আচরণে ক্রমাগত পরিবর্তন আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে এবং বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের প্রতি আস্থার অভাব সৃষ্টি করবে। তারা দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়া:
ট্রাম্প প্রশাসন বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র একঘরে হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতি ও ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে তার মন্তব্যের কারণে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর না করে রাশিয়া ও চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে।
তথ্য: সিএনএন, বিবিসি